BUET-Reports / anonymous-report

The goal of this repository is to collect anonymous reports from victims of BUET rags, tortures.
95 stars 19 forks source link

Git Reports Issue #187

Open BUET-Reports opened 5 years ago

BUET-Reports commented 5 years ago

Submitter: নাম বলা যাবে না Email: proxy@buet.com বুয়েটের প্রক্সি বিজনেস তখন আমি ফার্স্ট ইয়ার। ঢাকায় বাসা। হলে না থাকলে নাকি বিশ্ববিদ্যালয় জীবন ই বৃথা।ঢাকার বাসিন্দা হওয়ায় সিট দিতে চায়নি প্রভোস্ট। অনেক কষ্টে উনাকে রাজি করিয়ে হলে উঠে পড়লাম । হলে উঠার সাথেই র্যাগ ট্যাগ খেয়ে বুকে যতটুক কলিজা ছিল তাও শেষ। ১৬ ব্যাচ এর প্রথম স্ট্যাম্প দিয়ে মার আমিই খেয়েছিলাম । যাই হোক স্ট্যাটাসের ফোকাস এটা না।সাড়ে চার মাস পরও আমি গনরুমে। আমার ব্যাচমেট যারা ছিল ২-৩ জন বাদে তারা সবাই রুমে উঠে গেছে। একটাই কারন আমি চাটতে পারিনা বড় ভাইদের। আমার কথা একটাই ছিলো আমার তো হলে রুম নাম্বার অ্যালট করা। আমাকে রুমে সিট দিবে প্রভোস্ট।বড় ভাইরা এখানে কোথা থেকে আসলো (কী বোকা আমি!)। কয়দিন পর আমি বুঝে গেলাম বড় ভাইদের কাছে না যেয়ে উপায় নাই।আমার রুম লাগবে। আমি দ্বারে দ্বারে রুম ভিক্ষা করতে লাগলাম। আমার এখনও চোখে ভাসে আমি রশীদ হলের নীচ তলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত প্রতিটা রুমে নক করে জানতে চাইছি যে -ভাই কোনো বেড কী ফাকা আছে? আমাকে কী একটা বেড দেওয়া যাবে? প্রত্যেকটা রুম থেকে নেগেটিভ উত্তর আসছে। আমার চোখ দিয়ে পানি এসে পড়ছিলো। আমার অ্যালট যেই রুমে পড়ছিলো ওই রুমের ১৩ ব্যাচের ভাই বললো এখানে একটা সিট ফাকা হতে পারে। আরও দুজন এখানে উঠার জন্য রিকোয়েস্ট করছে। ওরা যদি না উঠে তবে তোমাকে ফোন দিবো।আমি বুঝে গেলাম এই রুমও আমার হাতছাড়া।অন্য রুম এ খোঁজ করতে করতে লাস্ট এক ভাইয়ের সাথে পরিচয় হল।তার নাম ঝলক ভাই (১৪)(সেসময়ের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক, রশীদ হল ছাত্রলীগ) । উনি আমার পরিচয় জিজ্ঞেস করল। পরিচয় বলার পরে দেখি উনি বলে তুমি ওই ছেলে না যে যাকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটাইছে? আমি বললাম জ্বি ভাই। উনি খুব দেখি উৎসাহী হয়ে উঠলেন। বললেন তুমি তো মিয়া সেই মাল। তুমি ছাত্রলীগে জয়েন কর।তোমার মধ্যে সেই স্পার্ক আছে। তারপর আমাকে বুয়েট ছাত্রলীগ যে সবার থেকে আলাদা , টিউশুনির টাকা দিয়ে চলে এইসব হেনতেন বুঝাইয়ে বললেন উনি রুমের ব্যবস্থা করে দিবেন টার্ম ফাইনালের পর। আমি চলে আসলাম। ২ দিন পরই আমাকে ১৩ ব্যাচ এর ভাই ফোন দিয়ে বলল তুমি রুমে উঠে যেতে পারো। যারা রিকোয়েস্ট করছিলো ওরা অন্য রুমে উঠে গেছে। আমি শেষ পর্যন্ত ওই রুমেই উঠলাম।পলিটিক্যাল ব্যাকাপে রুমে উঠার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলনা। ১০-১২ দিন পর ডাইনিং এর সামনে ঝলক ভাইয়ের সাথে দেখা। উনি হাসিমুখে বলল তোমার জন্য সিট ব্যবস্থা করে দিব একটু ফ্রি হলেই।আমি বললাম আমি রুমে উঠে গেছি। উনি যাস্ট এটুকু বলল -আমাকে জানাবা না! কয়দিন পর আমার ডাক আসল উনার রুমে।আমি ভয়ে কাপতে কাপতে গেলাম। আমি ভাবলাম হয়ত ঝাড়বে ওই কারনে। উনি আমাকে ভালোমানুষের মতো অনেক ধানাই পানাই করে শেষে বলল -তোমাকে একটা কাজ করতে হবে। পারবা! আমি আমতা আমতা করতে লাগলাম। উনি নীরবতা ভেঙ্গে বললেন তোমাকে জগন্নাথে প্রক্সি এক্সাম দিতে হবে। আমার কান দিয়ে ধোয়া বের হতে লাগল। এ আমি কি শুনলাম!উনি বললেন তোমাকে অনেক দিন ধরেই আমরা ফলো করতেছি। আমার কাছে মনে হইছে তুমি এই কাজটা করতে পারবা।টাকা পয়সা কোনো ব্যাপারনা। টিউশুনি আর করাতে হবে না। আমি বললাম ভাই আমার টাকার দরকার নাই। আমার যতটুক আছে আমার জন্য যথেষ্ট। উনি পড়ে বলল -যদি ধরা পড়ার ভয় থাকে তাইলে বলি ধরাও পড়বা না।ছাত্রলীগের লোক ওখানে থাকবে।যেই স্কুল কলেজ সেন্টারে সীট পড়বে সেখানের principle রাও আমাদের সাথে জড়িত। তোমার কোনো ভয় নাই।তারপর উনি ১০-১২ টা কিসের অ্যাডমিট কার্ড (আমার মনে নাই) বের করে আমাকে দেখালেন।"এই দেখো ছবি সব ফাটা প্লাস এখানে চেহারা বুঝারো উপায় নাই।আমরা জাস্ট এই ফাকি টাই ইউজ করি।যদি ধরাও পড় বলবা এটা তোমার আগের ছবি। ভেবে দেখ। আমাকে জানাও তারপর।" আমি প্রায় দুরাত ঘুমাতে পারিনাই। আমার চোখে ভাসত আমি এক্সাম দিচ্ছি। ধরা পড়ে গেছি। আমার মা-বাবার এতদিনের স্বপ্ন আমি নষ্ট করে ফেলছি।আমাকে জেলে নিয়ে যাচ্ছে। আমি চুপি চুপি বাসায় চলে গেলাম। এমন একটা সিচুয়েশন কাউকে মুখ খুলে বলব যে আমার সাথে এমন ঘটতেছে এমন উপায়ও নাই। আব্বা আম্মাকে বসায়ে একদিন বাসায় সাহস করে কথা উঠাইতে নিলাম। বললাম আম্মু বুয়েট তো অতো ভালোনা তোমরা যতটা ভাবো।বুয়েটে সবাই মদ খায়, গাজা খায়।আম্মু আমাকে থামায় দিয়া বলল তুইই খারাপ। পুরা বাংলাদেশ জানে বুয়েট এক নাম্বার ভার্সিটি।আর তোর কাছে শুনি উল্টা কথা। আমার তো মনে হয় তুইই খারাপ নাইলে সবার স্বাস্থ্য ভালো তুই এত মরার মত শুকনা কেন। আমি আর কথা বাড়াইনাই। আমার পায়ের তলায় মাটি সরে গেল।এদিকে ঝলক ভাই আমাকে সবচেয়ে নোংরা ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করল। আমার সব খবর উনার কাছে। আমি ঢাকার কোন এলাকায় থাকি, আমার বাসায় কয়জন ফ্যামিলি মেম্বার, বাবা কি করে, কোথায় চাকরি করে এইসব আমাকে গড়গড় করে সব বলা শুরু করল।আমাকে হলে আসতে বলল।আমি প্রচন্ড ট্রমায় ভুগতেছিলাম। আমি বুঝাতে পারব না ভাই তোমাদেরকে, এইযে এখন লিখতেছি আমার চোখে পানি আইসা পড়ছে।আমার একটাই ভয় ছিল আমার ফ্যামিলির যদি ওরা কিছু করে। আমার একটা ছোট বোনও আছে!! আমি হলে গেলাম। ভাইকে বললাম ভাই আমি পারবো না।উনি বললেন আচ্ছা থাক না পারলে জোর করার কিছু নাই। জাস্ট ওখানে থাকবা সেন্টারের বাইরে আমার সাথে । আমি কিছু বললাম না।শুক্রবার আমার রুমে নিজে আসল। আমি বললাম ভাই জুম্মাহ পড়ব। বলে, আসো আমিও তো পড়বো। চিল।আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই বাইকে উঠালো।১০ মিনিট পরে ধানমন্ডি লেকে থামল। দেখি ওখানে ২০-৩০ জনের মত আছে । একজন কেউ চিনি না। ঝলক ভাই আমাকে চার পাঁচজনের এডমিট কার্ড ধরায় বলল কোনটা নিবা?এটা নাও, তোমার চেহারার সাথে মিলে। এই বলে আমাকে ওইখানের অপরিচিত দুজনের সাথে দিয়ে বলল ওরা তোমাকে নিয়ে যাবে (আমি ঠিক এই ভয়টাই করতেছিলাম)আমি কি চিৎকার করব?পালায় যাব? হাজার হাজার পরিক্ষার্থী, কে শুনে কার কথা।আমাকে গভ: ল্যাবরেটরী স্কুলে নিয়ে গেল তারা। আমাকে ভিতরে পাঠায় দেওয়া হইলো। একবার ভাবলাম সেন্টারে যারা পুলিশ নিয়োজিত তাদের বলি, পিছনে তাকিয়ে ওই অপরিচিত দুজনের চেহারা দেখে আর সাহস হয়নাই। আমি জিম্মি। ঢুকে গেলাম। ঢুকে দেখি কিসের কি প্রটোকল। আমি একা!কেউ নাই। আমি ধরা পড়লে ওই দুজনও পলাবে!!! কপাল খারাপ হলে যা হয়। আমার সীট পরল ফার্স্ট বেন্চে!!!!পাশে বসা মেয়েটা জানতে চাইল কিসের প্রিপারেশন নিসো। আমি বললাম আমি কিছুরই প্রিপারেশন নেই নাই। আমি কিছু ask করিনাই। ও নিজে থেকেই বলল ও বুয়েটের প্রিপারেশন নিসে।হায় আল্লাহ! আমি নিজেই তো বুয়েটের। কালকে বুয়েটের পরীক্ষায় আমাকে যদি ক্যাম্পাসে দেখে!আমি আর কথা বাড়ালাম না।এক্সামিনার আসল। সবার ছবি চেক করতেছিল। আমাকে দেখে উনি ভ্রু কুচকালো। ঘুরে এসে আবার দেখল, আরেকজন স্যারের সাথে কি কথা বলল,আমি তখন এই প্রানপনে ভান করছি ম্যাথ করতেছি। উনারা আর ঘাটালো না। এক্সাম দিলাম। বের হয়ে দেখলাম ১০ ব্যাচ এর এক বড় ভাই আসল(সিভিলের)।উনি নাকি বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল কয় বছর আগে। এখন নাই। আমাকে জিজ্ঞেস করল কিছু খাবা নাকি, আমি বললাম হলে যাব। বললেন আচ্ছা যাও। আমি বললাম ভাই মানিব্যাগ আনি নাই। টাকা দেন। উনি আমাকে ৫০ টাকা ধরায় দিলেন। আমি রিকশা নিয়ে এসে পড়লাম। এরপরের ঘটনা সংক্ষেপে- ১/কখনো লীগের কোনো কাজে না থেকেও ঝলক ভাই রশীদ হলের কমিটির ১৬ ব্যাচ এর ২য় বেস্ট পদ পাওয়া।

২/১৭ ব্যাচ আসার পর গনরুমে যেয়ে আমি একা সবাইকে সাবধান করে দেই। কোনো সিনিয়র যদি কোনো ভাবে এইসব প্রক্সি দিতে বলে আমাকে জানাতে। ৩/এই ঘোষনার পর আমার হলের ব্যাচমেট অনেকের কাছেই চক্ষুশূল হওয়া ৪/আমার সবসময় guilty ফিল হতো আমি কিভাবে লীগার হলাম বা আমাকে বানিয়ে দেওয়া হল।আমি কখনোই এদের মেন্টালিটির না। ৫/নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে গতবছর সুযোগ বুঝে আমি লীগ থেকে পদত্যাগ করি একটি বড় স্ট্যাটাস দিয়ে। ৬/আমি এর অনেকদিন পর হলে যাই। আমাকে ডাইনিংয়ে দেখে মাইনুদ্দিন হাসান সৌরভ(১৬) মিনহাজ ভাইকে ফোন দেয় ১৪ ব্যাচের ৭/হলের ক্যান্টিনে মিটিং বসে।মিটিংয়ে ছিল ১৫ ব্যাচ এর নীলাদ্রী ভাই,মেহেদী ভাই এবং ১৪ ব্যাচ এর অয়ন ভাই। হাস্যকর ব্যাপার ছিল আমারই ব্যাচমেট আতিক (বিএমই) আমাকে হল থেকে বের করে দেয়ার জন্য বারবার মেহেদী ভাইকে বলতেছিল।কথাটা ছিল এরকম"তাহলে ভাই বের করে দেই "মেহেদী ভাই হাত ইশারা করলেন। আমি হল থেকে বিতাড়িত হলাম ।পরে এক জুনিয়রের কাছে শুনসিলাম আাতিক আমার বেড ছুড়ে ফেলে দিসিল ৮/অতি উৎসাহী আমার ব্যাচমেট ফারহান জাওয়াদ চৌধুরি ও রামকৃষ্ন তন্ময় আমাকে যেখানে পাবে সেখানে পিটানোর প্ল্যান নেয়(উল্লেখ্য এরা ১৬ ব্যাচের অন্যতম দুই প্রক্সি এক্সাম দাতা) ৯.বুয়েট থেকে মাইক্রো ভাড়া করে সাস্ট, হাজী দানেশে গমনরত এক ঝাঁক বুয়েটিয়ান ১০.মিনহাজ, নীলাদ্রী এরা আরেকটা প্রক্সি কমিটির মেইন। ১১।বুয়েট ছাত্রলীগের মেইন ইনকাম প্রক্সি বিজনেস

আশা করি এ পোস্টের পর সবাই সাহসী হবে। বুয়েট কেন্দ্রিক অদ্যবধি গড়ে উঠা প্রক্সি চক্র সমূলে উৎপটিত না হওয়া পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছি না।এ পোস্টের কমেন্ট বক্সে সকলের সাথে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ কাহিনী বর্ননা করার জন্য অনুরোধ করছি। দ্রষ্টব্য:এই পোস্ট আমার নাম সহকারে কোথাও পাবলিশ কইরেন না।আমার বাবা-মা জানলে হার্ট এটাক করবে। নাম ব্যতীত পোস্ট কপি করার অনুমতি আছে।

ID LINKS - Tanmoy - https://www.facebook.com/ramkrishna.tonmay

Farhan Zawad - https://www.facebook.com/farhan.chowdhury.15