BUET-Reports / anonymous-report

The goal of this repository is to collect anonymous reports from victims of BUET rags, tortures.
95 stars 19 forks source link

All ragging story merged 1 #214

Open Tanvir500 opened 7 months ago

Tanvir500 commented 7 months ago

Abrar Shahriare (17 Batch)

09 October 2019

১। লাশটি আবরার ফাহাদ না হয়ে হতে পারত আবরার শাহরিয়ার (আমার)

০৭.১০.১৯ তারিখে সিড়ির নিচে আবরার ফাহাদের লাশ রাখা ছিল, কিন্তু সেই লাশটি আমার ,আবরার শাহরিয়ার এর হতে পারত। আবরারের খুনিদের হাতে একইভাবে নির্যাতনের শিকার আমি।

ঘটনার সুত্রপাত ২০১৮, ১৬ ডিসেম্বর। বুয়েটের হলের দেয়ালে একটা চিকামারাতে ধর্ম অবমাননার ব্যাপারটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে কি না এটা নিয়ে আমি একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। এরপর আমাকে ডেকে রবিন, কেমিক্যাল '১৫ ও মুন্না মেকানিকাল '১৫ আমার সাথে কথা বলে। আমাকে পোস্টটা তৎক্ষনাৎ সরাতে বলা হয় , এবং আমাকে বুঝানো হয়, পোস্টটার ব্যাপারে।

এ পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছিল না।

এরপর রাতে একটা মিটিং এর সূত্র ধরে আমাকে বিশেষভাবে থাকতে বলা হয়। মিটিং এ কথাবার্তা শেষে আনুমানিক রাত ১১.৩০-১২ টা নাগাদ আমাকে শেরে বাংলা হলের ৫১১ নং কক্ষে নেওয়া হয়। আমার ল্যাপটপ, ২টা ফোন (১ টা অ্যানড্রয়েড) নিয়ে আসা হয়। আমার ল্যাপটপে কোনো পাসওয়ার্ড ছিল না। এরপর আমার ল্যাপটপ আর ফোনের সব ডকুমেন্ট চেক করা শুরু করে, এবং এ কাজে ছিল মুজতাবা রাফিদ (কেমিক্যাল'১৬) ও অমিত সাহা, সিভিল'১৬ (হ্যাঁ, সেই অমিত যে আমার সহপাঠী অভি- ইইই'১৭ এর হাত ভেঙেছিল)। আমাকে এক কাপড় করা হয়। এবং আমাকে রবিন কেমিক্যাল'১৫ আর অনিক মেকানিকাল'১৫( আবরার ফাহাদের প্রধান খুনি) এসে আমাকে রিমান্ডের ধরণে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। যেটা শুরু করে আমাকে একজন শিবির ট্যাগ দিয়ে। এই জিজ্ঞাসাবাদের কয়েটমিনিট পরে রবিন এসে আমাকে থাপড়ানো শুরু করে। এরপর সকাল বিএমই'১৬ (আবরার ফাহাদের আরেকজন খুনি) আমাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। অগণিত চড়- থাপ্পড়, এরপর স্ট্যাম্প দির়ে হাতে পার়ে বুকে আঘাত করে সকাল, লাথি দেয়। রুম থেকে আমার বের হওয়া পর্যন্ত সে কয়েক দফায় আমাকে মারধর করে। এরপর আমার ফোন চেক করা শেষে আসে পুরো টর্চার পরিচালনার মূল হোতা অনিক মেকানিকাল'১৫ আর তার হাঞ্চম্যান আশিকুল ইসলাম বিটু, কেমিক্যাল'১৬ ও একটু পর ফারহান জাওয়াদ, ইইই'১৬। বিটু আর ফারহান এসে আমাকে বেল্ট দিজ়ে নগ্ন পিঠে অবিরত এবং তারা ক্লান্ত না হুয়া পর্যন্ত ও পালাক্রমে মারতে থাকে।

এই পুরো সময়ে আমাকে ইনটারোগেট করে রবিন আর অনিক। রবিন পুরো প্রক্রিয়ার মাস্টারমাইন্ড। এসময় একটা প্রিন্টেড দৈনিক রুটিন লিস্ট (যেটা আমার ছিলও না) এসে দাবি করে এটা আমার রুম থেকে পাওয়া গিয়েছ, এবং আমাকে স্বীকার করতে বলে এটা আমার, এটটা শিবিররা করে এবং আমি করেছি।

প্রথমত, আমাকে স্বীকার করতে বলে, এরপর আমাকে নরম সুরে প্রলুদ্ধ করে, স্বীকারোক্তি এবং আরও নাম প্রকাশ করলে আমি বেঁচে ফিরব। এরকম কোন ইনফো না থাকায়, আমাকে বলা হয়, তারা আমাকে নাম দেবে, তাদের দেওয়া নাম আমি স্বীকারোক্তি হিসেবে উল্লেখ করি।

এই পর্যায়ের মাঝে অনিক আসে। তার প্রতিটা চড় আমাকে খাটে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে মাটিতে ফেলে দেয়। আমার চোয়াল ব্যাথায় আমার গলা থেকে চিৎকারের কোন শব্দ বের হচিছিল না। এরপর স্ট্যাম্প নিয়ে আমার জয়েন্টে (হাতের আঙ্গুল, কনুই, হাঁটু) তীব্র আঘাত করে অনিক। স্ট্যাপোলারের তীক্ষ্ণ ধার দিয়ে আমার পায়ের পাতায় খোঁচায়। আমার গলা টিপে ধরে, আমার বুকে স্ট্যাম্প দিয়ে আঘাত করে। অনিক এক পর্যায়ে স্বীকারোক্তির জন্য আমার চোখে জলন্ত সিগারেট ধরে। তাকে সরাসরি উদ্ধৃত করছি, "তুই মরে যা। তোর জন্য তো এটা শাহাদাৎ, তুই তো বেহেশতে হুর পাবি।"

আমি তারপর কথা বলার শক্তি হারায়ে ফেলি। আর তাদের কোনো কথার উত্তর দিতে পারি নি। রবিনের পুরো সময়ের কথাগুলো এমন ছিল, "তুই পুরোদমে ট্রেইনড", আর, "ও ভান করতেছে, ও নাটক করতেছে, ওর কিছুই হয় নি"। এই কথাগুলো আবরার ফাহাদকেও শুনতে হর়েছ । রুমে মুনতাসির, ইউআরপি'১৫ ও মুন্না, মেকানিকাল'১৫ উপস্থিত ছিল, চুল ধরেছে, থাপ্পড় দিয়েছে , তাদের ভূমিকা নগন্য। রুমে মুজাহিদ, ইইই'১৬ উপস্থিত ছিল, তবে সে আমার গায়ে হাত তোলে নি।

কথা বলার শক্তি নেই, কিন্তু এমন কথা শুনে আমার এই পর্যায়ে মনে হয় আমি মারা যেতে যাচ্ছি। হয়তো আবরারও এই কথাগুলোই শুনেছিল। হয়তো তাকে এই মুহূর্তগুলো সহ্য করতে হয়েছে, বা এর থেকেও খারাপ। না পেরে মারা গিয়েছে। আমি মারা যাই নি বলে হয়ত আজ সে মারা গেল।

ফর দ্য রেকর্ড, আমার ফেসবুক, মেসেজ, গুগলের ইমেইল, সকল অ্যাকাউন্ট চেক করে এবং কোনো রকম সংগঠন সংশ্লিষ্টতা পায় নি।

তাদের সাথে কোনোপ্রকার ঝামেলা (রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, বা কোরামজনিত) আছে, তাদেরই তারা শিবির ট্যাগ দিয়ে নির্যাতন করে।

এবং যে কোনো জুনিয়রকে এভাবে রুমে নিলে প্রথমেই তার ফোন চেক করা হয়। রাত ৪.৩০ নাগাদ আমাকে রুম থেকে বের করা হয়। আমার পিঠে, হাতে, কনুইয়ে কালসিটে ছিল। আমার গাল ফুলে গিয়েছিল,চোয়ালে প্রচুর ব্যথা। বের করার আগে আমাকে বলা হয়, আমাকে ওয়াচে রাখা হবে, যদি কোনো প্রুফ পাওয়া যায়, আমাকে হলে দূরে থাক, ক্যাম্পাসে হাঁটতে দেওয়া হবে না, আর এই মারধরের ঘটনা যদি ঘুনাক্ষরেও কেউ জানে, তবে আমাকে নিশ্চিত শিবির বলে হল থেকে পিটিয়ে বের করে দেওয়া হবে। আর নির্বাচনের সময়টুকুতে আমাকে হল ছাড়তে বলে।

বের হবার পরই, আশিকুল ইসলাম বিটু, আমার কাছে ক্ষমা চায়, আমাকে "একটু" বেশি মেরেছে সেজন্য। আর ফারহান আমার সাথে কথা বলে আমাকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। এরপরের ছয় মাসের মাঝে আমি, ফারহান আর মুন্না র সাথে আলাদাভাবে ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলি, তারা আমাকে কমবেশি কিছু বলে সান্ত্বনা দেয় ।

কিন্তু অনিক আমার কাছে ছিল মূর্তমান পিশাচ। তাকে আর রবিনকে দেখলেই আমি ট্রমাতে চলে যেতাম।

অনেকেই হয়তো এই দুজনকে চেনেন, কিন্তু রাতের আঁধারে এরা কতটা পাশবিক,কতটা নির্দয় হয়ে যায়, এটা যে কারও কল্পনার বাইরে।

আবরার ফাহাদ "পানি,পানি" বলে চিৎকার করেছিল, এরা পানি খেতে দেয় নি। আমি বেঁচে আছি, আমি কৃতজ্ঞ আল্লাহর কাছে।

The price we had to pay is another "Abrar"s death.

Irony:

১৮ ব্যাচের সাথে rag এর ঘটনার পর DSW ১৭ ব্যাচের সাথে প্রতি হলে গিয়ে মিটিং করে। আর রবিন কেমিক্যাল'১৫, মুজতাবা রাফিদ কেমিক্যাল'১৬, অমিত সাহা সিভিল'১৬ ও আরো এদের অ্যাসোসিয়েটদের সামনে এই হলকে র‍্যাগমুক্ত হল ঘোষণা করে।

আমি, আমরা চাই না, আর একজন আবরার ঝরে পড়ুক হত্যাকারীদের হাতে।

আমি, আবরার হত্যার বিচার চাই।

We want justice.

URP 17

18 October 2019

২। ডিপার্টমেন্টাল র‍্যাগ ও এর ভয়াবহতা

পুরোটা_পড়ার_জন্য_অনুরোধ_রইল

ইউআরপিতে বিগত কয়েকদিনের আন্দোলনের ফলাফল হিসেবে এরই মধ্যে বুয়েটে একটি পরিবর্তনের হাওয়া বইছে, র‍্যাগের মত বাজে কালচারগুলো বাতিল হচ্ছে। আমরা মনে করি এটা পূর্বেকার নিপীড়কদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলারও শ্রেষ্ঠ সময়। কিছু ডিপার্টমেন্টে র‍্যাগের নামে যে জঘন্য কাজগুনো হয়েছে তা নিয়ে অবধি কোন কথা হয়নি। আমরা, URP 17, সমগ্র ব্যাচ হিসেবে আমাদের উপর চলা নিপীড়নের বর্ণনা নিচে তুলে ধরলাম-

আমরা যখন ফার্স্ট ইয়ারের শিক্ষার্থী তখন আমাদের ব্যাচের ছেলেদের প্রায়ই ডাক পড়ত হলে থাকার জন্য। ওইসময় আমাদের ক্লাসের কোন ব্যাপার পছন্দ না হলে বা নিজেদের কোন ইচ্ছা মত না হলে রাতে আমাদের দাঁড় করিয়ে সে বিষয়ে আমাদের জবাবদিহিতা নেওয়া হত। এরকমই একরাতে শীর্ষ সংসপ্তক ও অর্কদীপ কে ক্যাফে যাওয়ার অপরাধে, অনুভব রুদ্র সিআর হিসেবে ব্যর্থ হওয়ায় (তাদের অভিমত), মোহাম্মদ খাইরুল ও অর্পণ দে কে হলের ডিপার্টমেন্টাল ভাইদের সাথে দেখা না করার অপরাধে ডেকে নেওয়া হয়। ছাদে উপস্থিত ছিল ১৬ ব্যাচের আনিস রহমান মিঠু, আবিদ হাসান, মুশফিক ফাইয়াজ, ফারাবি সরকার, সাইফুল ইসলাম ফাহিম এবং আরেফিন মেহেদী। সেদিন প্রথম থেকেই তাদের আচরণ বেশ আক্রমণাত্মক ছিল, এছাড়া উপস্থিত ১৭ এর সবাই ভয় পেয়ে গেছিল (উল্লেখ্য ১৬ এর কেউ কেউ মদ খেয়ে এসেছে বলে তারা সন্দেহ করে এবং কয়েকজন তাদের সামনেই গাঁজা নেয়।) ফলে তারা সিদ্ধান্ত নেয় সেফটি মেজারমেন্ট হিসেবে ব্যাপারটার একটা অডিও রেকর্ডিং রাখবে। শীর্ষর ফোনে রেকর্ড করা হবে। প্রথমে রাত ১১ঃ৪৫ এ সবাইকে আহসানউল্লাহ হলের ছাদে উঠানো হয় এবং প্রায় দুই ঘন্টার শেমিং সেশন চলে। এসময় কানে ধরা, এ পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা এরকম শাস্তি দেওয়া হয়। প্রায় দুইটার দিকে চা খেতে এবং তিতুমীরের ছাদে পরের সেশন নিতে তারা আমাদের ব্যাচের সবাইকে নিয়ে নিচে নামে। এমন সময় শীর্ষকে একা ডেকে পাঠানো হয়, আবিদ ও সাব্বিরের তাকে আহসানউল্লাহ হলের সামনের চা এর দোকানে চা খেতে নিয়ে যায়। এসময় কল করতে আবিদ শীর্ষর ফোন চাইলে রেকর্ডিং এর ব্যাপারটা সে দেখে ফেলে। তখন বাকি প্রায় সবাই তিতুমীরের ছাদে পোঁঁছে গেছে। আবিদ আশ্বাস দেয় যে এই কাজ সেও ফার্স্ট ইয়ারে থাকতে করেছিল, সমস্যা নেই; কিন্তু আর যেন না করি। নজরুল হলের ছাদে উঠিয়ে প্রথমে সে শীর্ষকে এক কিনারে নিয়ে যেয়ে রেকর্ডিংটা নিজের ফোনে নেয় এবং কিছু অংশ শুনে। তারপর সবার সামনে শীর্ষকে নিয়ে এসে আচমকা এক চড় মারে। সবাই হচকচিয়ে উঠলে সে রেকর্ডিং এর কথাটা সবাইকে জানায়। তখন সাব্বির এগিয়ে এসে শীর্ষকে জিজ্ঞেস করে "তোর পরিচিত কেউ আর্মিতে আছে?! নাই?!! কি করবি তুই আমারে, আমার নিজের ভাই আর্মি?!" বলে প্রচন্ড জোরে চড় মারে, শীর্ষ প্রায় মাটিতে পড়ে যায়। এসময় আনিস রহমান মিঠুও এগিয়ে এসে শীর্ষকে মারধর করে এবং "এরকম বজ্জাত বেহায়া আর জীবনে দেখি নাই, সাব্বিরের মত এত ভালো ছেলেরও তোকে মারতে হয়" - বলে গালিগালাজ শুরু করে। এরপর ১৭ ব্যাচের বাকি সবাইকে চেকিং করা শুরু হয় এবং এই কাজ পুরো ব্যাচের প্ল্যানে হয়েছে এটা স্বীকার করতে বলা হয়। আগেই ইশারায় সিদ্ধান্ত হয়ে গেছিল বলে কেউ ব্যাপারটা স্বীকার করে না। তখন আবিদ দ্বীপ দাশ, রুদ্রনীল সাহা এবং খায়রুল মুন্সীকে মারধর করে। অর্পণ দে এর স্পাইনাল কর্ডে সমস্যা থাকার কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এসময় সাইফুল ইসলাম ফাহিম শীর্ষকে একদিকে ডেকে নিয়ে যায় এবং কেন রেকর্ড করল তা জানতে চায়। শীর্ষ ভয় পেয়ে সেফটি মেজারমেন্টের ব্যাপারটা বললে সে তাকে বুঝায় তার মানে তো কাউকে নিশ্চয়ই বিচার দিতা। এতদূর তারা কেউ ভাবে নি এটা শীর্ষ বললে ফাহিম নানাভাবে তাকে বুঝায়, সবার সামনে গিয়ে সে অথরিটিকে বিচার দেওয়ার জন্য করেছিল বলতে প্ররোচিত করে। কিন্তু শীর্ষ সবার সামনে এ স্বীকারোক্তি দিলেই ১৬ এর উপস্থিত বাকিরা আরো ক্ষেপে যায়। আবিদ বলে "আমি তো গতবছর মজা নিতে করসিলাম, এই হারামজাদার তো হিউজ সমস্যা! " এ পর্যায়ে আনিস ও আবিদ আবার তাকে মারধর করে। পালা ক্রমে চলে উপস্থিত ১৭ এর সবার শেমিং সেশন ও মুরগী হওয়া, এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকার মত বিভিন্ন শারীরিক শাস্তি। প্রায় ৪টা বাজলে শীর্ষ বাদে বাকিদের নেমে যেতে বলা হয়। নামার সময় ফাহিম ব্যঙ্গ করে বলে "এই তোরা ব্যাচমেট, ব্যাচমেটকে ফেলে চলে যাচ্ছিস", কিন্তু ১৭ এর বাকিরা কিছু বলতে চাইলে কাউকে কোন সুযোগ না দিয়ে নিচে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তারা শীর্ষর ফোন সিজ করে ও রেকর্ডিং ডিলিট করে দেয়। এসময় তারা " তোরে এখন ছাদ থেকে মেরে ফেলে দিলে কেউ আমাদের কিচ্ছু বলতে পারবে", "বুয়েটে আসছস কয়দিন, কিসসুই তো চিনস নাই। হলে এর চেয়ে কত্ত খারাপ কিছু হয়, কেউ একটা টু শব্দও করে না", " ভিসি, ডিএসডাব্লিঊ, প্রোভোস্ট- সবই আমাদের হাতে। তুই কমপ্লেইন করলে বড়জোর আমারে এক বছর একাডেমিক বহিষ্কার করব, কিন্তু এরপর ক্যাম্পাসে তোর পা পড়লেই তোর লাশও পড়ব" ইত্যাদি বলে ও গালিগালাজ করতে থাকে। তারা রেকর্ডিং ডিলিট করার পর MiDrive এ স্টোর করা সব কিছু ডিলিট করে দেয়। তারপর তারা ফোনের সব মিডিয়া ও ডকুমেন্ট ডিলিট করে দেয়। তারপর তারা গ্যালিরিতে ঢোকে এবং ওইদিনের সমস্ত ছবি ডিলিট করে দেয়। এসময় তারা শীর্ষর প্রেমিকার ছবি দেখে তাকে স্লাট শেমিং করে এবং শীর্ষর পার্সোনাল লাইফ নিয়ে খুব জঘন্য পর্যায়ের নিচু মানসিকতার কথাবার্তা বলে হাসিতামাশা করে। এরপর হাসান সাব্বির ও বাকিরা মিলে শীর্ষর ড্রাইভে ঢোকে। এসব ডিলিট করার সময় আরেফিন মেহেদী ও সাইফুল ইসলাম ফাহিম বার কয়েক মানা করলেও কেউই তেমনভাবে বাধা দেয় না। ড্রাইভে লেকচার ও ক্লাসনোট ছিল দেখে শীর্ষ হাসান সাব্বিরের হাত ধরে এবং বলে "ভাই, রেকর্ডিং-এর আর কিছু কোথাও নাই"। হাসান সাব্বির তখন চড় মেরে শীর্ষকে মাটিতে ফেলে দেয় এবং চিৎকার করে বলে " আমারে শিখাস তুই!" এরপর সে আরও মারতে গেলে বাকিরা তাকে থামায়। ওই পর্যায়ে শীর্ষ এককানে প্রায় শুনতে পাচ্ছিল না। তার সম্পূর্ণ ড্রাইভ পরিষ্কার করে ফেলা হয়। এ পর্যায়ে আরেফিন মেহেদী তাকে একপাশে নিয়ে যায় এবং বলে "তোর সাথে যা হইসে খুব খারাপ হইসে, আর কখনো এরকম সিনিয়রদের সাথে লাগতে যাইস না। তবে তোর জায়গায় থাকলে আমি কখনোই আমার ড্রাইভ ক্লিয়ার করতে দিতাম না। কত জরুরী জিনিস থাকে।" এরপর শীর্ষকে আবার দাঁড় করিয়ে সবাই গালিগালাজ করে এবং ভোর ৫টার দিকে নেমে যেতে বলে। শীর্ষ দুর্বল শরীরে কাঁপতে কাঁপতে নামছিল, সিড়ির কাছাকাছি গেলে সাইফুল ইসলাম ফাহিম তাকে আবার ডাক দেয় এবং ব্যঙ্গ করে বলে "এই শিখলি এত্তক্ষণে, নিচে যে নেমে যাচ্ছিস ভাইদের সালাম দিসিস?!" এসময় সবাই আবার চিৎকার করে শীর্ষকে গালিগালাজ করে ও তাকে নিয়ে হাসিতামাশা শুরু করে দেয়। শীর্ষ লজ্জায় মাথা হেট করে ওই অবস্থায় প্রত্যেকের কাছে যায় ও সালাম দেয়। প্রতিউত্তরে তাকে "*দি না তোর সালাম", "এই সম্মান করস তুই সিনিয়রদের" ইত্যাদি শুনতে হয়। সিড়ি দিয়ে নামার সময়ও তাকে গালি শুনতে শুনতে নামতে হয়। ১৭ ব্যাচের মেহজাদ গালিব কেও আনিস, আবিদ, মুশফিক, ফাহিম, মেহেদী মিলে সোহরাওয়ার্দীর ছাদে উঠায়। এসময় তার বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ এনে মিঠু তার প্যান্ট খুলিয়ে তাকে স্ট্যাম্প দিয়ে পিটায়। এসময় তা পাশে ১৭ ব্যাচের Muktadir Rahman Aiman দাঁড়িয়ে ছিল, মাইরের তীব্রতা দেখে সে ওখানেই কান্না করে দেয় এবং শেষরাতের দিকে বিধ্বস্ত গালিবকে তার রুমে ফিরিয়ে নেই।

আরো এক রাতে, ১-২ এর প্রায় শেষদিকে ডিপার্টমেন্টে ভবিষ্যতে কিভাবে কি করা যায় তা নিয়ে আলাপ করতে ১৭ এর সব ছেলেকে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানে ১৬ ব্যাচের আবিদ, আনিস, ফারাবী, সাব্বির, মুশফিক, ফাহিম, আরেফিন মেহেদী, ইঞ্জামাম ও সামিন উপস্থিত ছিল। সেদিন তারা বলে তারা সব দূরত্ব বাদ দিয়ে আমাদের সাথে কাজ করতে চায়। এসময় শীর্ষর পাশাপাশি প্রথমদিন দ্বীপ ও অন্যান্যদের কেন মারা হলো জিজ্ঞেস করলে মুশফিক বলে "আসলে ওইদিন শুধু শীর্ষকে মারলে ব্যাপারটা হত না"। সে আরও বলে " আমরা তো ভাবসি তোরা এটা ভুলে গেসস, সিনিয়র জুনিয়রে এসব তো হয়ই"। কিন্তু সেদিনও Muhtasim Rahman Auritro কে হলে তার সাথে দেখা না করার অভিযোগে ও শীর্ষকে তথাকথিত বেয়াদবির অভিযোগে আবিদ লাঠি দিয়ে তাদের বেশ কয়েকবার পিটায়।

উল্লেখ্য, আজকে ইউআরপি ১৬ আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। ব্যাচ হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। তবে তাদের অনেকের কৃতকর্ম হয়ত তারা নিজেরাও জানে না। আমরা চাই তারাও এর বিরুদ্ধে এসে দাড়াক। আর হলে একদিন এসে থেকে সিনিয়রদের সাথে পরিচিত হওয়া আমাদের ডিপার্টন্ন্টের একটা ট্র্যাডিশন হয়ে গেছিল। আমরা আমাদের ১৮ এর ছেলেদের একদিন হলে থাকতে বাধ্য করেছি। এ ব্যাপারটায় আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। তবে তাদের কারো গায়েই হাত তোলা হয় নি বা দুর্ব্যবহার করা হয় নি। আমরা চাই এ খারাপ চর্চার সমাপ্তি হোক ও এজন্য প্রত্যেককে এগিয়ে আশার আহ্বান জানাই।

ধন্যবাদ। [ URP 16 এর অনুরোধে নিচে অপরাধীদের তাদের কৃতকর্মের মাত্রা অনুযায়ী

ক্যাটাগরাজড করা হলো-

১। এক্সট্রিম শারীরিক নির্যাতন- আনিসুর রহমান মিঠু, আবিদ হাসান, হাসান সাব্বির;

২। ভার্বাল অব্যিউজ ও মানসিক টর্চার- সাইফুল ইসলাম ফাহিম, মুশফিক ফাইয়াজ,

ফারাবি সরকার, আরেফিন মেহেদী;

৩। উপস্থিত থাকা ( শুধু একদিন রাতে) - ইনজামাম রিফাত, তাহমিদ তাজওয়ার সামিন। ]

[ Edit: মারধর তিতুমীরের ছাদে করা হয়েছিল, প্রথমে ভুলে নজরুল লেখা হয়েছিল। অনাকাঙ্কিত ভুল এর জন্য আমরা দুঃখিত। ] Md. Humayun Kabir

11 April 2017

৩। "আম্মু শোন, আমি খারাপ ছাত্র হয়ে গেছি। আমি সারারাত পড়িসি, কিন্তু পারি নাই। সবাই পারে, আমি পারি না। আমি বুয়েটে পড়ব না।

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারণ আর কোথাও বলার জায়গা না পেয়ে এখানে বলতে হচ্ছে। এডমিন চাইলে ডিলিট করে দিতে পারেন।

"আম্মু শোন, আমি খারাপ ছাত্র হয়ে গেছি। আমি সারারাত পড়িসি, কিন্তু পারি নাই। সবাই পারে, আমি পারি না। আমি বুয়েটে পড়ব না।

আমাকে না আম্মু কেউ খেতে বলে না। আমার কেউ নেই। ছাড়া আমার সাথে কেউ কথা বলে না। একবার যদি যাই, আমি আর আসবো না…

জানো মা, আমি একটাও আইন অমান্য করিনি। আমি কোনও সালাম মিস করি না। ছোটবেলায়ও আমি সালাম মিস করতাম না। সবাই আমাকে ভালো বলতো... বিশ্বাস করো আম্মু, আমি বাজে কথা বলতে চাইনি। আমাকে বাজে কথা বলতে বলে। আমি আর বলব না। আমি না সেদিন অনেক ভয় পাইসি! সারারাত ঘুমাইনি আম্মু...।" না, এগুলো কোন গাগলের প্রলাপ নয়। এগুলো আমাদের এক সতীর্থের অবচেতন মনের কথা। ৯ এপ্রিল ২০১৭। রাত পৌনে ১০টা। স্মৃতি হলে ডিনার করে আহসানউল্লা'র ক্যান্টিনে চা খেতে আসি। যাওয়ার পথে ইউকসু’র সামনে জটলা। ১২ ব্যাচের তৌহিদ শিশিরকে নিয়ে গেলাম ঘটনা জানার জন্য।

১৬ ব্যাচের একজনের হঠাৎ প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। সাথে মাথায় এবং পেটে ব্যাথা। রিকশায় করে ডিএমসি’র ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া ইচ্ছে। জিজ্ঞেস করলাম, ইমার্জেন্সি চিনো কেউ?

বলল, কাউকে জিজ্ঞেস করে নেব। চিন্তা করলাম, এই সময় সময় নষ্ট করা ঠিক না। তাই আমি রিকশায় উঠে বললাম বাকিরা আরেক রিকশায় আসো। ইমার্জেন্সিতে ডাক্তার সাহেব যথেষ্ট আন্তরিকতা নিয়ে সেবা দিলেন। যারা ডাক্তারের অবহেলার অভিযোগ করেন, তারা একবার ডিএমসি’র ইমার্জেন্সি ঘুরে আসতে পারেন। ডাক্তার সাহেবের সাথে কথাও হলো। (ডাঃ তারেক, রাগিব-রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ, Ishtiaque Ahmed Kallol ভাইয়ের ব্যাচমেট, ইনফ্যাক্ট দূর-সম্পর্কের আত্মীয়) তিনি যা বললেন, এর কারণ মূলত ডিপ্রেশন। কেননা গরমের এই সময়ে সাধারণত তীব্র শ্বাসকষ্ট ওঠে না। দুপুর এবং রাতে না-খেয়ে থাকায় গ্যাস ফর্ম করেছে। গ্যাসের ঔষধ, ইনজেকশন, আর ঘুমের ঔষধ দিয়ে এক রাতের জন্য এডমিশন দেন। আর পরদিন সকালে সাইকিয়াট্রিস্ট রেফার করেন।

আর আউট অব মাইন্ড ছেলেটা যা বলেছে, সত্যি বলতে আমার চোখে পানি চলে এসেছে। আমার নিজেরই গিল্টি ফিলিং হচ্ছি। যদি খারাপ কিছু হয়! ১৪ ব্যাচকে র‍্যাগ দেয়া নিয়ে যখন ১৩ ব্যাচকে ব্যাশিং করা হচ্ছিল এই গ্রুপে, আমার মনে পড়ে, আমিই সম্ভবত প্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম। কয়েকজন সিনিয়রের সাথে এ নিয়ে বাক-বিতণ্ডাও হয়েছে। কারণ আমার বিশ্বাস ছিল এবং এখনও বিশ্বাস করতে চাই, বুয়েটে র‍্যাগের এমন ভয়াবহতা ছিল না।

মনে মনে গালি দিলে মুখের সালামের কী মূল্য আছে! আদব-কেতা শেখানোর জন্য এমন নোংরা পথ কেন বেছে নিতে হবে? সবাই তো একই রকম ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসে না। একজনের কাছে যা নিছক মজা, আরেকজনের জন্য তা জীবন ধ্বংসকারী হতে পারে। ডঃ বলেছেন, আর্লি স্টেজে ব্রেক আউট না করলে ছেলেটা মেন্টাল ট্রমায় চলে যেতে পারতো। আমরা, বুয়েটিয়ানরা, নিশ্চয়ই কারও এতো বড় ক্ষতি করতে পারি না! রাত পৌনে ১টায় ডিএমসি-তে ওকে ভর্তি রেখে আসি। কিন্তু সারারাত আমার ঘুম হয়নি। একটা অক্ষর পড়াও হয়নি। হতে পারতো ছেলেটা আমার ভাই।

১৫ এবং বিশেষ করে ১৬ ব্যাচের যারা আছো, তোমাদের ৬-৭ বছরের সিনিয়র হয়েও হাতজোড় করে একটা অনুরোধ করতে চাই। এই বাজে 'ট্র্যাডিশন’টার যেন রেপিটিশন না रয়, প্লিজ!

সিনিয়র সবসময়ই বড়ভাই হিসাবেই থাকবা। জুনিয়র কেউ বেয়াদবি করনে ৩-২তেও শাসন করা যায়। সেটা সবার সামনেই, র‍্যাগ দির়ে নয়। ফ্রেশারস অবস্থায় কতোই বা বয়স থাকে! অনেকে বাড়ির বাইরে থাকেনি আগো। কারও জীবন প্রথম ঢাকায় আসা বুটেটে। ভাই হারিয়ে ভাই পেয়েছে তোমাদের। ভাইয়ের মর্যাদাটুকু রাইখখা, প্লিজ!

আমি পরে খোঁজ নিয়ে জেনেছি। ছেলেটি এখন ভালো আছে। প্রোগ্রামিং এর একটা কোর্স নিয়ে খাবি খাচ্ছে। স্যার বলে দিয়েছেন, "আমার কাজ তোমাদের শিখানো নয়, তোমাদের চ্যালেঞ্জ করা।" কী ভয়ংকর কথা! রেসের মাঠ মনে হচ্ছে। অথচ উল্টাভাবে বললে কতোই না সাহস পেতো ছেলেগুলা! সম্মানিত স্যারদের কাছে একটাই আর্জি, আরেকটু ছাত্র-বান্ধব কি হওয়া যায় না ক্লাসে, প্লিজ?

শেষে যা বলব, এতে অনেকেরই চক্ষুশূল হবো জানি। তারপরও বলি। বুয়েটের পলিটিক্যাল ছেলেদের আমার একটা কারগেই ভালো লাগে, বিপদে-আপদে খুব কাছের বন্ধুরা ছাড়াও এদের পাশে পাওয়া যায়। সেদিনও ১৫ ব্যাচের ২জন, ১৪ ব্যাচের ৩জন, আর ১১ ব্যাচের ২জন ডিএমসি-তে ছুটে গিয়েছিল। দিনশেষে আমাদের পরিচয়, আমরা বুয়েটিয়ান। 17 July, 2019

Wednesday…

৪। আর লজ্জা পেয়ে কাজ নেই। পোস্টটা করার সময় হয়েছে

শের-এ-বাংলা হলের 312 no. room এর '18 ব্যাচের আমরা চারজন ওয়েট করতেছিলাম কখন আমাদের কমন রুমে ডাকা হবে। সাধারণত রাত 11:30 থেকে 12:00 টার মধ্যে rag দেয়ার জন্য ডাকা হয়। কিন্তু প্রায় 12:30 বেজে গেলেও আমাদের ডাকা হচ্ছিল না বলে ধরেই নিয়েছিলাম যে ঐদিন rag দেয়া হবে না। এর কিছুক্ষণ গরেই ফোন আসলো" - ভাইরা কমনরুমে ডাকছে" ...

চুলে পানি দিয়ে 8 জন মিলে গেলাম কমনরুমে। সেখানে সবাইকে মোটামুটি নির্যাতন, গালাগালি করা হলো। এরপর 11 জনকে select করা হলো ছাদে উঠানোর জন্য। সেই 11 জানের মধ্যে আমি এবং আমার EEE এর রুমমেট ও ছিল। আমাকে ধরা হয়েছিল চুল বড় বলে, যদিও আমার চুল অনেক ছোট ছিল।

আগে কখনো ছাদে উঠে rag খাই নাই (রুমে ডেকে নিয়ে এর আগে 2 দিন rag দিয়েছিলো)। তাই প্রথমে অতটা ভয় না পেলেও পরে দাঁড়িয়ে থাকারও শক্তি পাচ্ছিলাম না। স্টাম্প দিয়ে পিটানো, চড় মারা, লাথি মারা সহ বিভিন্নভাবে টানা ৫ ঘণ্টা নির্যাতন চলে।

এবার আসল কথায় আসি। rag খেতে খেতে ফজর এর আযান দিয়ে দিলো। দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না, নিঃশ্বাস ছাড়তে কষ্ট হচ্ছিল, চোখ দিয়ে অবাধে পানি পড়ছিলো। পাশে তাকিয়ে দেখলাম আমার রুমমেটের চোখেও পানি। চারপাশে আযান দিচ্ছিলো, আর তার মধ্যেই জানোয়ারগুলো আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছিল। মন চাচ্ছিল ঐ মূহুর্তে tc নিয়ে এই BUET থেকে চলে যাই। কিন্তু কিছুই করার ছিল না। তখন ফজরের আযান হচ্ছিল, শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম - "জীবনের এক ওয়াক্ত নামাজও যদি কবুল হয়, তাহলে তার বিনিময়ে হলেও এর বিচার করো।"

সেদিন যেই কুকুরগুলো জানোয়ারের মত আচরণ করেছিল, তাদের সবাই এখন জেলে, কয়েক জনের রিমান্ডও হয়েছে দেখলাম। এদের সবারই ক্যারিয়ার শেষ, ফাঁসিও হতে পারে। After all, ধর্মের কল বাতাসে নড়ে...

আল্লাহ তাহলে আমার আর্তনাদ শুনেছিলেন। কষ্ট একটাই, হারালাম আবরার ফাহাদ ভাইয়ের মতো মেধাবীকে। তাঁর কাছ থেকে সমাজের অনেক কিছু পাওয়ার ছিল ...

Ragib Hasan (Compilation of 2015 Ragging reports)

২০১৫ সালে সিনিয়র কিছু এলামনাই বুয়েটে র‍্যাগ বন্ধ করার উদ্যোগ নেন। সেই সময়ে ভিকটিমদের কাছ থেকে কিছু র‍্যাগের অভিজ্ঞতার রিপোর্ট সংগ্রহ করা হয় এবং বুয়েটের কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। কিন্তু ছাত্রলীগ ও র‍্যাগারেরা খবর পেয়ে হুমকি দেয়, তারা বুয়েট অচল করে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিবে, যদি এই তদন্ত স্থগিত করা না হয়। আড়িপাতা থেকেই এই রিপোর্টগুলাকে ডিলিট করে দেয়া হয় বিশাল ট্রোলিং বাহিনীর চাপে।

আজকে খুঁজে পেলাম এই রিপোর্টটা। খেয়াল করে দেখলাম, ঐ সময়ে এগুলা বর্তমানের ডিএসডব্লুর কাছে শেয়ার করা হয়েছিল, কাজেই তিনি জানেন এগুলোর কথা, যদি তিনি বা বুয়েট সেসময় আর কিছুই করেনি। তবে উনি আবার ছাত্রলীগ বান্ধব কি না, কাজেই হা হুতোষ্মি! যাহোক, সবার জন্য রিপোর্টগুলো আবার শেয়ার করছি এখানে।

"র‍্যাগিং এর অভিজ্ঠতা - ৭, ৮, 3 ৯

"এবারের তিনটা ঘটনা আমাদেরকে জানিয়েছেন বুয়েটের একজন শিক্ষক, যিনি বর্তমানে একটি ডিপার্টমেন্টে প্রফেসর হিসেবে কর্মরত আছেন। সংগত কারনে তাঁর নাম প্রকাশ করছি না।"

৫. র‍্যাগিং এর অভিজ্ঞতা - ৭

"এক রাতে আমি আমার একজন কলিগের কাছ থেকে একটা ফোন পাই। ফোনে জানতে পারি যে একটি ছাত্রকে (ঘটনাচক্রে আমি এই ছেলেটির অ্যাডভাইসর ছিলাম) র‍্যাগিং এর নামে অত্যাচার করে অচেতন অবস্থায় দোয়েল চত্ত্বরে ফেলে রাখা হয়েছে। তাকে সেই রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয় যেখানে সে তিন মাস ছিল। তার কিছুদিনের জন্য স্মৃতি শক্তি হারিয়ে যায়। তিন বছর হয়ে গেছে এবং এখনো সে স্বাভাবিক এবং সুস্থ হতে পারেনি। এই ঘটনার পরে সে আর কোন ক্লাস করতে পারেনি বুয়েটে।"

৬। র‍্যাগিং এর অভিজ্ঞতা - ৮

বুয়েটের একজন সম্মানিত শিক্ষকের ছেলেকে হলে থাকাকালীন সময়ে র‍্যাগিং এর নামে নির্যাতন করা হয়। পরবর্তীতে সে বুয়েট ছেড়ে চলে যায় এবং বর্তমানে একটি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছে। আমি (অর্থাৎ, যিনি এই ঘটনা বলেছেন আমাদেরকে) স্যার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তিনি তাঁর পরিবারের সেই দুঃখজনক এবং কালো অধ্যায়কে আর স্মরণ করতে চান নাই।

৭। র‍্যাগিং এর অভিজ্ঞতা - ৯

এক জন ছাত্রকে র‍্যাগের নামে খুব বেশী অত্যাচার করা হয়। সিনিয়র ছাত্ররা তাকে প্রায় নগ্ন করে ফেলে। তাকে রাত তিনটা পর্যন্ত অত্যাচার করা হয়।

প্রসঙ্গত এই প্রফেসর আরো বলেছেন যে তিনি কয়েক বছর আগে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করার কিছু উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তখন তিনি জানতে পারেন যে, প্রতি বুধবার রাতে হলে র‍্যাগ দেয়ার প্রথা প্রচলিত। কোন কোন নতুন ছাত্ররা চেষ্টা করে বুধবার রাতে হলে না থাকতে। তাদেরকে হুমকি দেয়া হয় যে ক্যাম্পাসে কোথাও তাদেরকে পাওয়া গেলে র‍্যাগ দেয়া হবে। এমনকি কিছু ছাত্রীও র‍্যাগের নামে এই ঘৃণ্য কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত।" Tahmeed Hossain

20 October 2019

৮। আমার ১-১ এর জঘন্য স্মৃতিঃ

বুয়েটে আসার পর আমার পুরো ১-১ এ ত্রাস সৃষ্টির একমাত্র প্রধান কৃতিত্ব শেরে বাংলা হল ও মেকা ১৬ এর আসিফ রায়হান মিনারের। আমাদের ক্লাস শুরুর কয়েকদিনের মাথায়ই আমাদের ক্লাসে মেকা ১৬ আসে এয়ার ইলেকশনের জন্য। তখন হঠাৎ মেকা ১৬ থেকে আমাকে ডেকে নেয়া হয় এবং বুয়েটে আসার আগে আমার দেয়া একটা স্ট্যাটাস নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। এই অবস্থায় আমি শেরে বাংলার রেসিডেন্ট শোনামাত্র (তখনো হলে উঠি নাই) মিনার আমার উপর চড়াও হয় এবং ক্লাসের মধ্যে আমার সাথে বাজে আচরণ করে। তখন ওখানে উপস্থিত মেকা ১৬ এর ভাইরা তাকে আটকায় এবং আমার এলাকার মেকা ১৬ এর এক ভাই তাকে আমার গায়ে হাত তুলতে নিষেধ করে। তখন সে আমাকে পাশের রুমে নিয়ে যায়, সেখানে সাথে অন্য দুয়েকজন ভাই যায়। ওই রুমে যাবার পর মিনার আমাকে কান ধরিয়ে এক পায়ে দাড়া করিয়ে রাখে ও মারার হম্বিতম্বি করে। তখন ওনার সাথে যাওয়া মেকা ১৬ এর বাকিরা তাকে আটকায়, তবে আমাকে দুয়েকটা বকা ঝকা করেন। সে আমাকে মেকানিকাল এসোসিয়েশন এর রিপ্রেজেনটেটিভ পদে নির্বাচন করতে আটকায়, বলে যে আমি বেয়াদব ও সিনিয়রদের সাথে কাজ করতে অযোগ্য। অথচ ১৩,১৪ এর ফেস্ট আর ১৮ এর রিসেপসনে আমি খুবই সক্রিয় থাকি অথচ মিনার নিজে কখনো ডিপার্টমেন্টের কোনো কাজে আসে নাই। এরপর মিনার আমাকে শাস্তি হিসেবে প্রতিদিন ক্লাসের পর তার সাথে তার ক্লাসরুমে দেখা করতে যেতে বলে। কিন্তু আমি যাই নাই ভয়বশত। এই নিয়ে সে আমাকে একদিন ডেকে পাঠায়। এমতবস্থায় আমার এলাকার এক মেকা ১৬ এর ভাই তিতুমীরে তার রুমেই আমাকে ডাকেন যেখানে মিনার আগে থেকে ছিল। ওখানে আমাকে মিনার এক পায়ে প্রায় এক ঘন্টা দাঁড়া করিয়ে রাখে। এইসময় রুমে উপস্থিত অন্য ভাইরা ক্ষেত্রবিশেষে বকাঝকা করলেও মিনার উত্তেজিত হয়ে যেন মারধোর না করে সে বিষয়ে খেয়াল রাখে। এই র‍্যাগের পর মিনার আমাকে হলে উঠার আগে হলের সব ১৬ এর পারমিশন নিয়ে উঠতে হবে এইটা বলে। এরপর আমার এলাকার ওই ভাই আমাকে ট্রমা কাটিয়ে কথাবার্তা বলে স্বাভাবিক করেন এবং খাইয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেন। এরপর শেরে বাংলা হলে মিনারের সাথে দেখা করতে গেলে মিনার আমাকে নিয়ে ১০০০ ব্লকের ডানদিকের একটা রুমে যায় এবং সেখানে সে আমাকে মুরগি হয়ে থাকতে বলে রুম থেকে চলে যায় এবং সারারাত সে আসে নি। তিন চারঘন্টা পর ঐ রুমে এক বড় ভাই এসে আমাকে চলে যেতে বলেন। কিন্তু পরদিন আমি মিনার ভাইকে না বলে চলে আসায় সে আবার বকাঝকা করে। সে তখন আমাকে বলে মেকা ১৬ এর ১৮০ জনের সবাইর সাথে দেখা করে, সব হলের রেসিডেন্টদের রুমে গিয়ে দেখা করে নাম সাইন করিয়ে আনতে হবে। কিছুদিনের মাথায় ক্লাব ফেয়ারে আমি একটা ক্লাবের কিছু ফর্ম হাতে নিয়ে অডির সামনে দাড়িয়ে ছিলাম। হঠাত মিনারের সাথে আমার সম্মুখে চোখাচোখি হয়। তখন আমি ফর্মগুলো যেন উড়ে না যায় তাই ডান হাত দিয়ে ফর্ম চাপা দিয়ে রেখেছিলাম ও ভুলে বাম হাত দিয়ে সালাম দিয়ে ফেলি। এরপর সে আমাকে অডির সামনেই অন্য কয়েকজন ১৬ এর সামনে আমাকে কান ধরায়।

মিনারের সাথে পরবর্তী ঝামেলা হয় মেকা ১৬ এর এক ভাইকে আমি চিনতে না পারায়। এই কথা শুনে মিনার আমাকে ২০০৫ নাম্বার রুমে নিয়ে মারধোর শুরু করে। থাপ্পড় মারার পর সে জুতা দিয়ে মারতে উদ্দ্যত হয় এবং মারে। এদিকে সে ফোন করে মেকা ১৬ এর ঐ ভাইকে ডেকে নিয়ে আসে, তখন মেকা ১৬ এর ওই ভাই আমাকে মারা হচ্ছে দেখে বেশ ক্ষিপ্ত হন এবং ব্যাপারটার বিরোধিতা করেন। পরে তিনিই রুম থেকে আমাকে বের করে রুমে ফেরত পাঠিয়ে দেন। এরপর হলের সুবর্ণজয়ন্তীর সময় মিনার অন্য সিনিয়রদের সামনে ডেকে নিয়ে কোনো কারন ছাড়াই বলে যে আমি প্রচন্ড বেয়াদব এবং আমি যদি হলের কোনো প্রগ্রামে আসি তবে তার অনুমতি নিয়ে হলের কিছুতে আসতে হবে।

আমার ফার্স্ট ইয়ারের সময়টা পুরোপুরি মিনার এর করা জঘন্য আচরণের জন্য ট্রমাটাইজড হয়ে ছিল। এইটা সত্যি যে মেকা ১৬ সহ হলের ও এলাকার ১৬ এর অনেক ভাইই আমাকে অনেক পছন্দ করতেন তারা হেল্পও করতেন সব সিচুয়েশনে। কিন্তু মিনারের কারনে আমার পুরো ফার্স্ট ইয়ারে ১৬ এর সাথে ফ্রি হতে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয় এবং সবার সামনে সে বাজে আচরণ করায় অন্য সিনিয়রদেরও আমার ব্যাপারে অযথা বাজে ধারণা তৈরি হয়।

এই ট্রমার কারনেই আমাদের রিসেপশনের সময় যখন মজা করা ও ফ্রি হবার স্বার্থে ১৩ থেকে স্টেজে তোলা হয় তখন আমি ব্যাপারটায় আরও মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি। কারন মিনারের করা জঘন্য আচরণের দরুণ আমি সিনিয়রদের প্রতি আতংকের একটা দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ছিলাম।

মেকা ১৬ এর অনেকে হয়ত ছিলেন এই সময়গুলোয়, অনেকেই সাধ্যমত হেল্প করেছেন জানি, বিশেষ করে সুমিত ভাই, সিয়াম ভাই আর লাবিব ভাই অই সময়টায় সবচেয়ে বেশি পাশে ছিনেন যাদের কারনে আমি কিছুটা স্বাভাবিক হই। অনেকেই হয়ত ক্লাসরুমে এই ঝাড়াঝাড়ির সময় ছিলেন কিন্তু তেমন কিছু বলেন নাই। তাদের প্রতিও আমার কোনো অভিযোগ নাই। আমি নিজেও যখন ১৭ থেকে ১৮ ক্লাসে যায় এবং সেখানে বকাঝকা হয় ওখানেই ছিলাম। যদিও আমার যতদূর স্মরণে আসে বকাঝকা শুরু হবার পর আমি প্রতিবারই ক্লাস থেকে বের হয়ে দরজার বাইরে দাড়িয়ে পরে দরকারি আলোচনার সময় আবার ভিতরে ঢুকি। যাইহোক এসব কিছুর জন্য আমি ১৮ এর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এছাড়া ব্যাচ হিসাবে আগেই আমরা এই চুপ থাকা নিয়ে এপলজিও দিয়েছি।

৯। রশিদ হলের দাপুটে বাহিনীর কীর্তি

২৩ নভেম্বর ২০১৮, রাত ১১ টা।

পরেরদিন দিন আমার অপারেটিং সিস্টেম অনলাইন থাকায় আমি আর আমার রুমমেট হাসিব পড়তেছিলাম। হঠাত ১০-১২ জন আমার রুমে ঢুকে। তাদের মধ্যে ১৪ এর ৫-৬ জন , ১৫ এর ৩-৪ জন বাকিরা ১৬, ১৭ এর ছিল। ১৪ এর মিনহাজ ভাই আমাদের জিজ্ঞেস করে , তোরা কে কে হল হল ফেস্টের টাকা দিস নাই। আমাদের রুমের কেউই টাকা দিই নাই। আমি বললাম ভাই আমি হল প্রোগ্রামে থাকবো না তাই টাকা দিব না। ১৪ এর বাধন ভাই বললো ," হল ফেস্টে থাকিস বা না থাকিস টাকা দিতে হবে"। " ভাই আমি হল হল ফেস্টে থাকব না ত কেন টাকা দিব?"

মিনহাজঃ বেয়াদব, তুই কিভাবে আমাদের মুখের ওপর এইভাবে না করতে পারিস। রুমে বড় ভাই ঢুকা সত্যেও তুই কিভাবে পড়তেছিস। ( আমার ল্যাপ্টপ কোড রান করার জন্য ওপেন ছিল)। তুই কিভাবে এই হলে থাকিস আমি দেখে নিব। ফাহিম, ( আমার উইং এর ১৪ এর ) ওর সব কিছু নামা রুম থেকে।

ফাহিম, ফাহিম বলে চিল্লাইয়া রুম থেকে চলে গেছে। ১৪ এর সবাই আমার ওপর চিল্লাচ্ছিল তখন কিভাবে আমি এইভাবে না করতে পারলাম। চিল্লানোর সাথে সাথে এত অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করতেছিল যে এই ধরনের গালি আমি জীবনে মুখেও আনতে পারবো না। কিছুক্ষন পর মেহেদি আর কায়েদ আমার রুমে ঢুকে জিজ্ঞেস করলো কি বলছিলাম আমি। আমি বললাম যে, "ভাই আমি হল কনসার্টে থাকবো না তাই টাকা দিব না। মেহেদি বললো , " তোর এইভাবে বলা উচিত হয়নি। "

"তুই থাকলে কিভাবে বলতি ?" সে কিছু বললো না। ১৫ এর সবাই তখন আমার সাথে একমত হয় যে ১৪ এর চিল্লাচিল্লি এখানে লজিক্যাল ছিল না। অনেকেই ওই দিন টাকা দেয় নি দেখে হয়তো তারা বেশি টেম্পার দেখাচ্ছে। সব কিছু ভুলে গিয়ে আমি পরেরদিনের জন্য পড়াশোনা করতেছিলাম। রাত তখন ১২:৩০ টা। মেহেদি আর নিহাদ আমার রুমে এসে আমাকে রশিদ হল ৪০৫ নম্বর রুমে নিয়ে যায়। ওই দিন ফ্যাকাল্টি ফুটবল থাকায় হাটতে কষ্ট হচ্ছিল । তাই তারা আমাকে এক রকম কাঁধে করেই নিয়ে যায়। যাওয়ার আগে আমি জিজ্ঞেস করি “ ভাইদের কি হইছে ? আমি কি এমন কিছু বলে ফেলছি?"

"আমরা জানি না রে ভাই ওনারা কেন এরকম পিনিক দেখাচ্ছে।" “ ভাই চল, ওনারা চিল্লাফাল্লা করবে পরে অনেক।" আমি ভাবলাম হয়তো ধমক টমক দিবে হয়তো , বড়জোর দুই একটা চড় থাপ্পড় দিবে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমি স্বপ্নেও ভাবি নাই।

৪০৫ নম্বর রুমে প্রবেশ করলাম। রুমে ছিল ৬ জন। সবাই ১৪ ব্যাচ এর। মিনহাজ মেকা'১৪, অয়ন সিভিল, ১৪, ঝলক সিভিল'১৪ , বাধন সিভিল'১৪, সৌরভ সিভিল’১৪, আর ফাহিম মেকা'১৪। মিনহাজ ভাই আমি জিজ্ঞেস করলো, " তুই আমাকে কি বলছিলি?" এই বলে এত জোরে থাপ্পড় মারে যে কেও কখনো এত জোড়ে আমাকে মারে নাই। মিনহাজ ভাই আমাকে তার হাতে হয়রান হওয়ার আগ পর্যন্ত মারে। তার সে একটা স্ট্যাম্প নেয়। তার গায়ে যত শক্তি আছে সেই শক্তি দিয়ে ১৫-২০ টা বাড়ি দেয় আমার বাম হাতে। স্ট্যাম্প ভাঙার আগ পর্যন্ত মারতে থাকে। এই বুঝি আমার বাম হাত যেন ভেঙে গেল। কান্না করার স্বভাব তেমন একটা ছিল না আমার। যেহেতু আমি কাদতেছিলাম না সেই কারনে তারা আরও বেশি হিংস্র হয়ে উঠে। “ তুই কিভাবে আমার সাথে এইভাবে কথা বলছ। এখন পর্যন্ত কোনো সিনিয়র আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে পারে নাই। আর তুই আমার সাথে এইভাবে কথা বলছ।" এই বলে আবার আমার মুখের ওপর চড় মারে। যখন শুনতে পায় যে আমার পায়ে সমস্যা আছে তখন তারা আমার বা পায়ে আঘাত করে। আমার বা পায়ের হাটুতে লাথি মারে। আমি মাটিতে পড়ে যাই। মাটিতে পড়ে যাওয়ার পরেও তারা আমার পায়ের ওপর লাথি মারতে থাকে। নতুন স্ট্যাম্প নিয়ে আবার মারতে থাকে। যখন ই আমার পায়ে কেও মারতেছিল , ব্যাথাটা এতই বেশি ছিল যে নিজের কাছে মনে হল , এই বুঝি আমি মারা যাচ্ছি। ব্যাথায় আমি চিল্লাচ্ছিলাম। মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়তেছিল। কান্না করে বলতেছিলাম , ভাই আমাকে ছেড়ে দেন। ভাই আমাকে ছেড়ে দেন। ভাই আপনাদের কাছে হাত জোর করি ভাই আমাকে ছেড়ে দেন। সৌরভ ভাই বলে উঠল , "আজ পর্যন্ত কোনো জুনিয়রকে মারতে দেখছিস? তবুও কেমনে তুই আমাদের সাথে বেয়াদবি করছ? তোর কি বড় ভাই নাই । বড় ভাই থাকলে এরকম করতি না।" সৌরভ ভাই আরও অনেক আজে বাজে বকছে যে শুনলে যেকোনো মানুষের মাথা নষ্ট হয়ে যাবে। বাধন ভাই আমাকে থাপ্পড় মেরে একই রকম কথা বলে মজা নেয়। ঝলক ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করছিল যে তুই কি বলছিলি। যখন ই আমি উত্তর দিতে যাই তখন আমার মুখের উপর থাপ্পড় মেরে আমাকে মেঝেতে ফেলে দিত। মেঝেতে ফেলে আবার মারতো। মুখ থেকে বের হওয়া রক্ত যখন ওর হাতে লাগে তা আমার টিশাতে মুছতেছিল। মিনহাজ ভাই একটু পর পর সবাইকে বলতেছিল কেন তারা আমাকে মারতেছে না। মিনহাজ ভাই আমাকে মারতেছিল আর যখন টায়ার্ড হয়ে যেত তখন উঠে গিইয়ে সিগারেট খেত। সিগারেট খেতে খেতে বলত " ওই তোরা ওরে মারছ না কেন তারে। ওই তোরা ওরে মারছ না কেন তারে। আমার তো তারে খুন করতে ইচ্ছে করতেছে। এই কথা বলেই আমার মুখের ওপর লাথি মারতো।" যখন ওর লাথির কারনে আমি মাটিতে পড়ে যেতাম আর আমার পা বের হয়ে যেত তখন আমার পায়ে লাথি মারত। পায়ে যখন মারত তখন মনে হত এই বুঝি মারা যাচ্ছি। ভাঙা পায়ে মার মানেই কলিজা যেন ফেটে যাচ্ছে।

একটু পর অয়ন ভাই রুমে ঢুকে। "কিভাবে তুই আমাদের সাথে বেয়াদবি করিস। তোকে শিক্ষা দেওয়া লাগবে" এই বলে অয়ন ভাই আমার মুখে লাথি ঘুষি মারতেছিল। আমার দুই পা উচ্চ করে স্ট্যাম্প দিয়ে মারতে থাকে। পায়ের তালুতে কিংবা হাটুতে । অন্যরা যখন মারতেছিল আমাকে তখন সে বলতেছিল , পায়ের তালুতে মার । অন্য জায়গায় মারলে দাগ থাকবে। এখানে মারলে দাগ থাকবে না। মিনহজ ভাই আর অয়ন ভাই পালাক্রমে মারতে থাকে। কখনো হাতে কখনো বা স্ট্যাম্প দিয়ে। একজন টায়ার্ড হলে অন্যজন আসে। আমি ব্যাথায় চিৎকার করতেছিলাম। সবার পায়ে ধরতে ছিলাম । কিন্তু ওই রুমের কেও আসে নি আমাকে মার থেকে বাচানোর জন্য। মিনহাজ ভাই জিজ্ঞেস করলো " ওই তোর ফোন দে?" " ভাই আমি ফোন আনিনি" ফোন আনিস নাই কেন এই বলে আবার আমার মুখে লাথি মারে। রক্ত বের হয়ে ফ্লোরে পড়ে । মেহেদিকে দিকে আমার রুম থেকে ফোন আর ল্যাপটপ আনানো হয়। ওরা আমার ফেসবুক প্রোফাইল চেক করে। কিছু না পেয়ে তারা আমার মেসেঞ্জার চেক করে। মেসেঞ্জারেও যখন কিছু পাচ্ছিল না তখন দেখে যে আমার সাথে কয়েকজন মেয়ের চ্যাট আছে। (যারা হয় আমার ব্যাচম্যাট না হয় সিনিয়র আপু, যাদের সাথে প্রয়োজন আর অপ্রয়াজনে কথা হত)। ফাহিম ভাই আমার চ্যাট পড়তেছিল আর তা ব্যাঙ্গ করে সবার সামনে তা উচচারন করে হাসাহাসি করতেছিল। একটু পর বলে যে এই এই পোলা তো আওয়ামি লীগের পোস্টে হাহা দেয়। মিনহাজ ভাই বলে কত্ত বড় সাহস তুই আওয়ামী লিগের পোস্টে হাহা দেছ। শিবির তুই। আমি বললাম ভাই আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। আমার চাচা একজন শইীদ। এরপর তারা একটু থামে। শেষ পর্যায়ে যখন ৩টা স্ট্যাম্প ভেঙে যায় তখন বাহির হতে হকিস্টিক আনে। আমি সবার পায়ে ধরে মাফ চাচিছিলাম। ওরা বলতেছিল তুই আজকেই হল ছেড়ে চলে যাবি। আমি রাজি হয়ে যাই। জি ভাই আজই চলে যাব। আর আসবো না এই হলে। ওদের মনে দয়া হল। আমাকে ছেড় দেয়। যখন মেহেদী আর নিহাদ আমাকে নিতে আসে তখন বলে, "এই পোলা ১৩ এর ওই পোলার মত যারে আমরা আগেরদিন মারার পর পরের দিন ক্লাস করতে গেছে"। ২ংঃ৩০ এ আমি রুম থেকে বের হই। রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে ৪০৬ নম্বর রুমের ফাহিম ইইই’’১৫ আমাকে নিয়ে তার রুমে নিয়ে বসায়।

কয়েকজন ফ্রেন্ড মিলে আমাকে ডিএমসিতে নিয়ে যায়। ওখানে এক্সরে আর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর বললো যে একজন অর্থোপেডিক্স ডাক্তার দেখানোর জন্য। ডাক্তার বলে যে, আমার লিগামেন্ট ছিড় গেছে আর পায়ে ফ্রেকচার দেখা গেছে। ১ মাস হাটতে পারবা না আর ৬ মাসের মতো ভারি কোরো কাজ করতে পারবো না।

মুঃ নাসিম উদ্দিন

কম্পিউটার কৌকল'১৫, বুয়েট Shakhawat Ovi

08 October 2019

১০। অমিত সাহাঃ এক বিভীষিকার নাম

Shakhawat Ovi

08 October 2019

৮ মাস আগে অমিত সাহা নামের ১৬ এর ভাইটি আমার হাত ভেঙ্গে ফেলে। কারণ উনাকে দেখলে সালাম দিইনি নাকি কখন।

যারা আমাকে চেনেন তারা জানে আমি কিরকম ছেলে।

নিম্ন মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির বড় ছেলে আমি। ২ মাস তীব্র কষ্টের মাধ্যমে গেছিলাম। ২১ দিন পর আমার অপারেশন হয় এবং প্লেট লাগানো হয়েছে। যার cost ৮০% আমাকে বহন করতে হয়েছে।

আমাদের বলা হয়েছিল সিড়ি থেকে পড়ে ভেঙ্গে গেছিল বলতে। জুনিয়র ছিলাম। ভয়ে বলিনি কাউকে।।

আর বললেও কিছু হইতোনা (রিসেন্ট ঘটনা জানেন)..

ইভেন আমার ফ্যামিলিকেও আমি বলিনি। কারণ বললে উনারা আমাকে বুয়েটে পড়তে দিবেনা। বাট একটা কমেন্ট ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি এখন আমার অভিভাবক এর কানে গেছে। আর এখন আমাকে প্রেশার দিচ্ছে বুয়েটে পড়া লাগবেনা। চলে যেতে। প্রেশার মানে খুব প্রেশার।

অনেক স্বপ্ন নিয়ে অনেক কষ্ট, অনেক সারভাইব করে এখানে এসেছি।।এখন স্বপ্নটা অধরা রেখেই যা সম্ভব চলে যেতে হবে।।

সাথে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা ছাড়া।

Rashed Kaisar (04 Batch)

28 July 2019

১১। বুয়েটের র‍্যাগিং কালচার এবং আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা:

ছোট কাল থেকে, বাড়ির মেজো ছেলে কিনা বলে জানিনা, আমি কিছুটা অন্তুর্মুখী, কথা বলতে গেলে প্রকট তোতলামোর সমস্যা এবং একটু ইমোশনাল (রাগ অথবা অভিমান) হয়ে গেলে কাঁদো কাঁদো চেহারা হয়ে যেতো, শেষে কেঁদেই ফেলতাম এমন অবস্থা ছিলো। খুবই কম বয়সে বুঝে গিয়েছিলাম, একটু গায়ে গতরে বড় না হলে অথবা অন্য গুণ না থাকলে ভবিষ্যতে বুলিইং ঠেকানো কঠিন হবে। সেই কারণে ছোটকাল থেকে ব্যায়াম করে কিছুটা মাসল বানিয়েছিলাম+ খেলাধুলায় ও ভালো ছিলাম। ফলে স্কুল এবং কলেজে তেমন একটা সমস্যার মুখোমুখি হয়নি। ক্যাডেট কলেজের পরিবেশে হয়তো টিকে থাকা আমার জন্যে অনেক কঠিন হতো, কিন্তু যেহেতু ক্যাডেট এ পড়তে হয়নি ওইরকম পরিস্থিতিতে আমি কেমন করতাম তা আমি নিজেও জানিনা।

২০০৪ সালের শেষের দিকে যখন বুয়েটে ঢুকি, প্রথম নাম শুনি র‍্যাগের। সিনিয়র ব্যাচের ভাইরা নাকি সদ্য প্রবেশ করা জুনিয়রদের সাথে সম্পর্ক ভালো করার জন্যে নাচ-গান-অভিনয়ের মতো নানা কাজ করিয়ে মজা নেয়। শুরুর দিকে সোহরাওয়ার্দী হলের ১০১১ রুমে উঠি, সাথে ছিলো ফৌজদারহাট ক্যাডেটের ২ ব্যাচমেট। এই সময়ে এক রাতে বাইরে ছিলাম, এসে শুনি ০৩ এর কিছু ভাই রুমে এসে সবাইকে আশে পাশের কয়েকরুমের ব্যাচমেটদের এক রুমে এনে র‍্যাগ দিয়ে গিয়েছে। কাউকে চেয়ারের উপর উঠিয়ে এক পায়ের দাঁড় করিয়ে রাখা অথবা একজনকে নায়ক এবং আরেকজন নায়িকা বানিয়ে গানের সাথে নাচানো হয়েছে। কিন্তু ক্যাডেটের বন্ধুরা এসবে মজাই পাচ্ছিলো। তাদের ভাষ্যমতে, এর আগে যা ফেস করে আসছে, তার তুলনায় এগুলো কিছুনা! কিন্তু এসব শুনে আমার ভয়ে খুবই খারাপ অবস্থা। পরিচিত এক বড় ভাইকে বললাম, আর বলেছিলেন,

-আরে এসব তো নরমাল। তবে বেশি ভয় লাগলে আমার নাম বইলো, ওরা কিছু করবেনা। কিন্তু আমি জানি এইটা করলে বরং হিতে-বিপরীত হবে। এই কারণে শুরুর দিকে কয়েকটা সপ্তাহ বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে রাতে নিজের রুমে থাকতাম না। আর গভীর রাতে কারা কারা র‍্যাগের স্বীকার হলো সেই কাহিনিগুলো শুনতাম। হঠাৎ করে খেয়াল করা শুরু করলাম ০৩ ভাইরা আমাকে দেখে ফিসফাস করে ( হয়তো নিজের ভয় থেকে মনে হওয়া), যেহেতু আমিই হলে থাকা একমাত্র জুনিয়র যাকে এখনো র‍্যাগ দেওয়া যায়নি।

হঠাত একদিন খবর আসলো, ০৩ এর ভাইরা সবাইকে হলের কমনরুমে নবীন বরণ দিবে এবং খাওয়াবে। সিনিয়রদের জুনিয়রদের নবীনবরণ দেওয়ার মাধ্যমে র‍্যাগ দেওয়ার সাথে আমি ইতিমধ্যে পরিচিত (থ্যানক্স টু মেকানিক্যাল ডিপার্টেম্নেট্টে নবীন বরণ নামের র‍্যাগ, যেটায় কিনা আবার জুনিয়রদের স্টেজে এনে র‍্যাগ দেওয়া হয়)। কিন্তু আমি ভাবলাম, আর কতো এইভাবে পালিয়ে পালিয়ে থাকা! সাহস করে এর মুখোমুখি হওয়া প্রয়োজন, নাহলে সিনিয়র ভাইরা আমাকে সহজে ছাড়বেনা।

অবশেষে আসলো সেই মাহেন্দ্রক্ষন। সবাইকে কমন রুমে জড়ো করানো হলো। আমি আসার সাথে সাথে আমাকে লাস্ট এর একটা চেয়ারে বসতে দেওয়া হলো, বুঝে গেলাম অনুষ্টানের শেষ আকর্ষণ আমি। শুরু হলো একজন একজন কে সামনে ডেকে এনে র‍্যাগ দেওয়া। কাউকে দিয়ে গান, কবিতা অথবা দুইজনকে নায়ক-নায়িকা বানিয়ে নাচানো হলো। একজন উচ্চস্বরে চটি পড়ানো হল। পাশের রুমের এক ব্যাচমেটকে জামার উপর মেয়েদের অন্তর্বাস পড়িয়ে বসিয়ে রাখা হলো। সবার শেষ আসলো আমার পালা। এসে দাঁড়ালাম সবার সামনে। অনেকটুকু নার্ভাস এবং কিছুটা ভীত আমি। কিন্তু মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি, খারাপ কিছু করতে বললে মেরে ফেললেও আমি বলবোনা। প্রথমে পরিচয় জানতে চাওয়া হলে দিলাম।

গান গাও দেখি একটা

কাঁপা কাঁপা বেসুরো গলায় "সে যে বসে আছে" গাইলাম। সবাই খুবি মজা পেলো। এক বড় ভাই আমাকে স্যানিটারি ন্যাপকিন দিলো।

এটা কি জানো?

না জানার কোন কারণ নাই, তার পর ও মাথা নাড়লাম জানিনা। - ওই তুই ( তুমি থেকে তুই এ চলে গেলো) আমারে বিশ্বাস করতে বলস, এটা কি জানোস না? ইন্টারের বায়োলজী বই পড়স নাই!!

আচ্ছা, ( আরেক ব্যাচমেটকে দেখায়-যে চটি পড়ছিলো) ওর কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে নে...

আমি তার কাছে গেলাম, তার কাছে থেকে জেনে সবার সামনে উত্তর দিলাম

মেয়েরা মাসিকের সময় ব্যবহার করে।

বড়ভাইদের চোখে খুশির ঝিলিক!

এবার "মাসিক" কি বল?

চুপ করে বসে আছি, কি করবো ভাবতেছি। এরপর আমি (অলমোস্ট কান্না করা চেহারা) যা বললাম এবং করলাম , তার জন্যে আমি সারাজীবন গর্ববোধ করি ( মাথায় কি ভর করেছিলো, আমি জানিনা)

আমি এইসব আজে বাজে কথা বলতে পারবোনা।

এই কথা বলে সবার সামনে হেঁটে আমার নিজের রুমে চলে আসলাম, আর পাশ দিয়ে বড় ভাইরা বলে যাচ্ছে

কত্তো বড় সাহস!!

-এই ধর, মাইর লাগা এইটারে!

নিজের রুমে এসে অপমানে আমি কান্না করে দিয়েছিলাম।

কিছুক্ষণ পর এক বড় ভাই এসে বোঝানো শুরু করলো, এইসব খুব নরমাল, আমরা ও ফেস করে আসছি , আমরা যা ফেস করছি, তার তুলনায় তোমাদেরগুলো কিছু না, এসব না করলে সিনিয়র-জুনিয়রদের সম্পর্ক ভালো হয়না---ব্লা ব্লা ব্লা। সাথে গরু মেরে জুতা দানের মতো নান্নার মোরগ পোলাও এর প্যাকেট দিয়ে গেলো। অনেক রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, তারপর গভীর রাতে সেই মোরগ পোলাও এর প্যাকেট ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে আসলাম।

এরপর আর কোনদিন আমি সিনিয়র ভাইদের সম্মানের চোখে দেখিনি। এই কারণে যে আমার সিনিয়রদের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়নি তা কিন্তু না। পরবর্তিতে মেকানিক্যাল ক্রিকেট টিমের এবং হল ফুটবল টীমের সদস্য হিসেবে অনেক বড়ভাইয়ের সাথে ভালো সম্পর্ক হয়েছে। এখন কেউ যদি বলে তাকে, র‍্যাগ সিনিয়র-জুনিয়রদের ভালো সম্পর্কের জন্যে প্রয়োজনীয় একটা জিনিস, এটা একটা খারাপ কাজের জাস্টিফিকেশন ছাড়া আর কিছুনা। আমার কাহিনি হয়তো থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলা, নগ্ন করে রাখার ( রশীদ হলের শোনা কাহিনি) মত সিরিয়াস কোন কাহিনী না, কিন্তু এই ধরনের কাহিনি গুলো জাস্ট শুরু মাত্র।

র‍্যাগের আরেকটি জাস্টিফিকেশন, আমার সাথে করা হয়েছিনো, এই জন্যে আমিও করবো। যার কারণে আমার ব্যাচের ছেলেরা সেইম ভাবে ০৫ এর জুনিয়রদের সাথে করছিলো ( আমি যাইনি)। কোন একটা ব্যাচের উচিত এই ট্র্যাডিশন ব্রেক করা। সদ্য বুয়েটের জুনিয়র ব্যাচের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে, যাতে তারা সম্মিলিত ভাবে র‍্যাগ ট্র্যাডিশনকে প্রত্যাখ্যান করুক। শুরু হোক নতুন বুয়েটের।